Wednesday, November 4, 2009

নব্য জ্যোতির্বিজ্ঞান ও একটি প্রত্নগ্রন্থ

নব্য জ্যোতির্বিজ্ঞান ও একটি প্রত্নগ্রন্থ
জাহিদ আকোন






কদিন আগেই ঘটে গেল ঘটনাটা।
২০০৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসের কোন এক বিকেলে আমি যখন দারুন আগ্রহ নিয়ে মহাবিশ্ব ও এর অদ্ভুত নিয়মানুবর্তিতার উপাখ্যান লেখার চেষ্টা করছি, তার কিছুদিন আগেই ঘটে গেল সেই হৃদয়স্পর্শী ঘটনাটি।


২২ জুলাই, মঙ্গলবার। সকাল ৭:৫৬। আমি পঞ্চগড়ের জলপাইগুড়ি সীমান্ত এলাকায় মধুপাড়া গ্রামে সদলবলে অপেক্ষায় রয়েছি এক মাহেন্দ্রক্ষণের। হঠাৎ চারদিকে রাতের আঁধার নেমে এল। নিজের শরীর পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে না। ঘুটঘুটে অন্ধকার নেমে এল। উজ্জ্বল হলদেটে সাদা গনগনে তপ্ত সূযর্টা হয়ে গেল কুটকটে কালো। সীমান্তের ওপারের স্বয়ঙ্ক্রীয় আলোকবর্তিকাগুলো জ্বলে উঠলো জ্বল জ্বল করে। গ্রীষ্মের দিনে সকাল ৮টার সময় যখন সূর্যের গনগনে আলোয় রাস্তায় বেরোনো দায়, তখন আকাশে তাকাই। ওমা! একি! চোখের সামনে ভাসছে শুক্রগ্রহ বা শুকতারা, ওদিকে কালপুরুষের কোমরবন্ধনীর তিনটি তারা, তাদের পাশে রিগেল, হরিদ্রাবর্ণ বেলাট্রিক্স; বৃহৎকুক্কুরমন্ডলে আকাশের সবচেয়ে উজ্জ্বল তারা – লুব্ধকও দেখা যাচ্ছে! সারাজীবন যাকে দেখব বলে অপেক্ষার প্রহর গুনেছি, সেই বুধগ্রহ দেখি আমার দিকে তাকিয়ে মিটিমিটি হাসছে! সূযর্টা যেন একটা কালো থালা দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে। অথচ কী আশ্চর্য, কেউ অবাক হচ্ছে না! বরং সবাই – উত্তরবঙ্গের তথা বাংলাদেশের সব মানুষ যেন তখন পঞ্চগড়ে – অধীর আগ্রহে চরম আনন্দে উপভোগ করছে এই অতিপ্রাকৃতিক দৃশ্য। বাংলাদেশ থেকে দৃশ্যমান একবিংশ শতাব্দীর প্রথম ও শেষ পূর্ণ সূর্যগ্রহণ।


আমি শুধু ভাবছি। বিজ্ঞান মানুষকে কত এগিয়ে দিয়েছে! এই কয়েক শত বছর আগেও তো মানুষ সূর্যগ্রহণের মত এইসব মহাকাশীয় ঘটনাগুলোকে নিয়ে কতইনা কল্পকাহিনিতে বিশ্বাস করতো - সূর্যগ্রহণ হল রাহুর গ্রাস। আরও কত কী! সেসব লিখতে বসলে কয়েকটা বই লেখা হয়ে যাবে। কিন্তু আধুনিক বিজ্ঞান অত্যন্ত সুন্দরভাবে এর ব্যাখ্যা দিয়েছে। বিজ্ঞান দেখিয়েছে যে, এখানে কোন দুই দেবতার লড়াইয়ের ব্যাপার নেই। বরং সূর্যালোকে একটি বস্তুর (চাঁদ) ছায়া পৃথিবীতে পড়ায় পৃথিবীপৃষ্ঠের উপর ঐ ছায়ার অংশ থেকে সূর্যালোক দেখা যায় না। ফলে সেখানে সূর্যের আলো পৌঁছুতে পারে না; অন্ধকার হয়ে যায়। এটাই সূর্যগ্রহণ। আর মাঝে মাঝে এইসব উল্লেখযোগ্য মহাকাশীয় ঘটনা ঘটার কারণ হল – মহাকাশীয় বস্তুসমূহের জ্যামিতি ও গতি। তাইতো মানুষ সূর্যগ্রহণকে আজ আর ভয় পায় না। সূর্যগ্রহণের সময় গর্ভবতী মায়েরা মাছকোটা বন্ধ রাখে না তাদের গর্ভের সন্তানের ক্ষতি হবে এই ভয়ে। এসবই আধুনিক বিজ্ঞান তথা জ্যোতির্বিজ্ঞানের অবদান।


কিন্তু মহাকাশীয় বস্তুসমূহের জ্যামিতি ও গতি সম্পর্কে জানতে মানুষকে অনেক চড়াই-উৎরাই পার করতে হয়েছে। এই মধ্যযুগ পর্যন্তও মানুষের ধারনা ছিল পৃথিবী মহাবিশ্বের কেন্দ্রে অবস্থিত। রাতের আকাশের দিকে তাকালে অবশ্য যে কেউই তাই মনে করবে। মনে করবে – পৃথিবী একজায়গায় ঠায় দাঁড়িয়ে আছে। আর সবকিছু নিয়ে গোটা আকাশটা প্রতিদিন উদিত হচ্ছে, আর অস্ত যাচ্ছে। আর লম্বা সময় ধরে দেখলে জটিল কিছু নিয়ম চোখে পড়ে। মানুষ তখন ভাবতো, পৃথিবীকে কেন্দ্র করে ঘুরছে অন্যান্য গ্রহগুলো - সূর্য, চাঁদ, বুধ, শুক্র, মঙ্গল, বৃহস্পতি ও শনি। তারা এদেরকে বলত “যাযাবর তারা” বা গ্রহ। এর কারণ হল - আকাশের সব বস্তুই স্থির; কিন্তু শুধু ওই ৭টি বস্তুই তারাদের পটভূমিতে তারাদের সাপেক্ষে তাদের অবস্থানের পরিবর্তন করে; ঘুরে ঘুরে বেড়ায়। বিজ্ঞানী Ptolemy ১৫০ সালে এই ভূকেন্দ্রিক জগৎব্যবস্থাকে সুচারুরূপে প্রতিষ্ঠিত করলেন। খ্রিষ্টীয় গির্জা থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ – সবাই এই তত্ত্বে বিশ্বাসী ছিল। Ptolemy’র তত্ত্বমতে পৃথিবী এবং তারাগুলো স্থির। সূর্যসহ ৭টি গ্রহ শুধু পৃথিবীর চারদিকে জটিল পথ অনুসরণ করে ঘুরছে।


কিন্তু মধ্যযুগের শেষ দিকে এসে (১৫৪৩) পোল্যান্ডের এক যাজক বিজ্ঞানী যা জানালেন তা কেউ বিশ্বাস করতে প্রস্তুত ছিল না। এ ছিল অদ্ভুত, অবিশ্বাস্য এক তত্ত্ব। Nicolaus Copernicus বললেন, “আসলে পৃথিবী মোটেই মহাবিশ্বের কেন্দ্রে অবস্থিত নয় বা সূর্য, চাঁদ প্রভৃতি গ্রহগুলো আসলে পৃথিবীর চারদিকে ঘুরছে না। বরং পৃথিবীসহ অন্যান্য গ্রহগুলোই ঘুরছে সূর্যের চারদিকে। আর মহাবিশ্বের কোন কেন্দ্র নেই।“ “বলে কি! মাথা খারাপ! কী আবোল তাবোল কথারে বাবা!” – কেউ বিশ্বাস করতে রাজি হল না এসব গাঁজাখুরি গল্প!


গালিলেও গালিলেই (Galileo Galilei) ছিলেন তখনকার ইতালির খ্যাতনামা বিজ্ঞানী ও জোতির্বেত্তা। তিনি অন্যরকম একটা কাজ করলেন। তিনি ছোট্ট একটি দূরবীনযন্ত্র বানিয়ে ফেললেন। এটি দিয়ে তিনি গ্রহগুলোর গতি আরো ভালভাবে দেখার চেষ্টা করলেন। তিনি বেশ কয়েকদিন ধরে নিয়মিত মহাকাশ পর্যবেক্ষণ করে দেখলেন যে, বৃহস্পতির চারদিকের ৪টি বস্তু আসলে গ্রহটিকে কেন্দ্র করে ঘুরছে। তিনি ভাবলেন, বৃহস্পতি গ্রহ যদি ৪টি মহাকাশীয় বস্তুর কেন্দ্রে থাকে তবে এই ৪টি বস্তুর কেন্দ্র তো পৃথিবী নয়! এরকমভাবে অন্যান্য গ্রহের বৈশিষ্ট্যাবলি আকাশগঙ্গা ছায়াপথ ইত্যাদির বিভিন্ন তথ্য বিশ্লেষণ করে ১৬১০ সালে তিনি স্থির সিদ্ধান্তে এলেন যে, “কোপার্নিকাসের কথাই ঠিক। পৃথিবী বিশ্বের কেন্দ্রে থাকতে পারে না। সূর্যই এই চেনা বিশ্বের (সৌরজগতের) কেন্দ্রে রয়েছে।“


এবার ঘটল ঘটনা! দারুনভাবে রেগে গেল মহাপ্রতাপশালী খ্রিষ্টীয় গির্জা যার প্রবল প্রতিক্রিয়াশীলতার কারণে তৎকালীন মুক্তচিন্তাশীল বিজ্ঞানীরা কন্ঠরুদ্ধ। এযে ধর্মদ্রোহিতা! গির্জার বিশ্বাসের (শেষ পৃষ্ঠায় টিকা দেখুন) বিপরীত কথা যে বলেছেন গালিলেও। তাকে বন্দি করে হল। শাস্তি দেয়া হল। রাখা হল গৃহবন্দী করে।এবং তাকে এটা বলতে বাধ্য করা হল যে, পৃথিবীই বিশ্বের কেন্দ্রে রয়েছে! গৃহবন্দী অবস্থাতেই তাঁর মৃত্যু হল।


কিন্তু এরপর সময় যত এগিয়েছে, মুহুর্মুহু প্রমাণিত হয়েছে – গালিলেও-কোপার্নিকাসের কথাই ঠিক। সূর্যকে কেন্দ্র করেই ঘুরছে গ্রহগুলো। পরে সময়ের তিরোধানে আরও আবিষ্কৃত হল যে, সূর্য আসলে কোন গ্রহ-ই নয়; এটি একটি অত্যুজ্জ্বল আগুনের গোলা, একটি তারা, একটি নক্ষত্র। অন্যদিকে চাঁদসহ অন্যান্য গ্রহগুলোর নিজস্ব কোন আলো নেই। এরা সূর্যের আলোতেই আলোকিত হয়। কালক্রমে এও বোঝা গেল যে, চাঁদকে আসলে গ্রহই বলা যায় না। এটি আসলে সরাসরি সূর্যের নয়, বরং পৃথিবীর চারদিকে ঘুরছে। তাই এটি একটি উপগ্রহ; পৃথিবীর উপগ্রহ।


এরপর জ্যোতির্বিজ্ঞান আর থেমে থাকেনি। এগিয়েছে বিদ্যুদ্বেগে। বড় বড় দূরবীন বানিয়ে বিজ্ঞানীরা দূরের তথা অতীতের বস্তু বা ঘটনা দেখেই শুধু ক্ষান্তি দেন নি, তারা আজ ছুটে চলেছেন গ্রহ থেকে গ্রহে, প্রাণের খোঁজে, আবিষ্কারের নেশায়। তারা দূরের গ্রহে পাঠিয়ে চলেছেন মহাকাশযান। চাঁদে তো আজ মানুষ অহরহই যাচ্ছে। কিছু কিছু মহাকাশযান তো আজ সৌরজগতের মায়া ত্যাগ করে পরিভ্রমণ করছে আন্তর্নাক্ষত্রিক স্থানে।


বিংশ শতকে এসে জ্যোতির্বিজ্ঞান বিভক্ত হয়েছে বিভিন্ন শাখা-প্রশাখায়। জ্যোতিঃপদার্থবিজ্ঞান নিয়ে এসেছে চমৎকার সব ধারনা – আপেক্ষিকতা, কৃষ্ণবিবর, নিউট্রন তারা, সিঙ্গ্যুল্যারিটি (Singularity) ইত্যাদি। বীক্ষণমূলক জ্যোতির্বিজ্ঞান আবিষ্কার করছে পালসার, কোয়েজ়ার, নতুন নতুন অভিনব বৈশিষ্ট্যের ছায়াপথ, মহাকর্ষীয় প্রতিসরণ বা আলোকবক্রতা (Gravitational Lensing)। SETI(Search for Extraterrestrial Intelligence)-এর মত মহাপ্রকল্প খুঁজে চলছে ET (অপার্থিব বুদ্ধিমান প্রাণি)। সৃষ্টিতত্ত্ব (Cosmology) খুলে দিচ্ছে মানবতার সবচেয়ে বড় গোলকধাঁধার জট – মহাবিশ্বের সৃষ্টির রহস্য। অন্যদিকে কোয়ান্টাম বলবিদ্যা উন্মোচন করছে পরমাণুর ভেতরকার চোখধাঁধানো জগতের অবগুণ্ঠন।


সৃষ্টিতত্ত্ব আর কোয়ান্টাম বলবিদ্যা বলছে – মহাবিশ্বের সৃষ্টি হয়েছে আজ থেকে ১৪০০ কোটি (১৪ বিলিয়ন) বছর আগে অভাবনীয় ক্ষুদ্র ব্যাখ্যাতীত Singularity-খ্যাত বিন্দুর বিস্ফারণের মাধ্যমে। সেই বিস্ফোরণের রেশ বয়ে চলেছে আজও – আজও মহাবিশ্ব প্রসারিত হয়ে চলেছে। ছায়াপথসমূহের মধ্যকার দূরত্ব বেড়েই চলেছে আর Cosmic Background Radiation-এর তাপমাত্রা ক্রমাগত কমেই চলেছে (এখন ২.৭কেলভ়িন)। এই তত্ত্বের নাম মহাবিস্ফোরণ তত্ত্ব (Big Bang Theory)।


মহাবিস্ফোরণ তত্ত্ব জানাচ্ছে - মহাবিস্ফোরণের পর মুক্ত বিকিরণ থেকে সৃষ্টি হল উপপারমাণবিক কণিকাসমূহ, তা থেকে সরল পরমাণু (Hydrogen ও Helium)। সরল পরমাণুর গ্যাস একত্রিত হয়ে তৈরি করল গ্যাসীয় মেঘ, তা থেকে তারাসমৃদ্ধ ছায়াপথ। এই তারাগুলো কালক্রমে তাদের জীবন শেষে বিস্ফোরিত হয়ে ভারী মৌল তৈরি করল। ভারী মৌলের গ্যাস মহাকর্ষের প্রভাবে একত্রিত হয়ে তৈরি করল অসঙ্খ্য গ্রহ-উপগ্রহ-গ্রহাণুর দল বা সৌরজগৎ। সেই গ্রহের কিছুতে ক্রমে আবির্ভূত হল জীবন। এ এক মহাকালীয় মহাজাগতিক গল্প। এত অল্প পরিসরে কী তা বলা সম্ভব!


১ লক্ষ আলোকবর্ষ ব্যাসের আকাশগঙ্গা ছায়াপথের পরিধির কাছে, কেন্দ্র থেকে ৩০ হাজার আলোকবর্ষ দূরে, ছায়াপথের ওরাইয়ন নামের সর্পিলাকার বাহুতে অবস্থিত আমাদের চিরচেনা এই সৌরজগতের সৃষ্টি এই ছায়াপথের একটি সৌরনিহারিকা থেকে, আজ থেকে ৪৫০ কোটি বছর আগে। সূর্য থেকে ১ জ্যোতির্বিজ্ঞানীয় একক (AU = ১৫ কোটি কিমি) দূরে অবস্থিত আজকের পৃথিবী এরপর অস্তিত্বশীল হয় গ্রহাণুসমূহের উপর্যুপরি আঘাতের ফলে (Late Heavy Bombardment), গ্রহাণুগুলো একত্রিত হয়ে। ক্রমে উত্তপ্ত পৃথিবীর পৃষ্ঠ ঠাণ্ডা হয়ে আসে। সৃষ্টি হয় পানির। আর পানি থেকে সৃষ্টি হয় প্রাণের।




বিজ্ঞানের এতসব আবিষ্কারের বেশির ভাগই কিন্তু ঘটেছে এই ঊনবিংশ-বিংশ শতকে এসে। গালিলেও বা কোপার্নিকাস গবেষণা করেছিলেন মধ্যযুগের ইউরোপে। কিন্তু ভাবতেই অবাক লাগে যে, বিজ্ঞানের আবিষ্কৃত এতসবকিছুর অনেকগুলোই কিন্তু একটি গ্রন্থে লিপিবদ্ধ হয়েছিল এগুলোর আবিষ্কারের অনেক অনেক আগে যেসময় মানুষের পক্ষে এসব সম্পর্কে ধারনা করাও ছিল বলতে গেলে অসম্ভব, খ্রিষ্টের জন্মের মাত্র ৬ শতককালের মধ্যে, আজ থেকে প্রায় ১৫০০ বছর আগে। আর সেই মহাগ্রন্থটির নাম – ‘আল-কুরআন’ (অর্থ: পঠিত)। আর কুরআনের এই কথাগুলো যিনি বলেছেন, মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন তিনি হলেন মুহাম্মাদ (সঃ)।






কয়েকটা উদাহরণ দেয়া যাক। আমাদের জীবনে যে মহাকাশীয় বস্তুটির গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি সেটি হল সূর্য। এরপরেই রয়েছে চাঁদ, তারা ও অন্যান্য গ্রহগুলো। এগুলো সম্পর্কে কুরআন বলেছে –


• লুকমান ২১.২৯: তিনি চন্দ্র ও সূর্যকে করিয়াছেন নিয়মাধীন, প্রত্যেকটি বিচরণ করে নির্দিষ্টকাল পর্যন্ত।
• আম্বিয়া ২১.৩৩: তিনি সৃষ্টি করিয়াছেন রাত্রি ও দিবস এবং সূর্য ও চন্দ্র; প্রত্যেকেই নিজ নিজ কক্ষপথে বিচরণ করে।
• ইয়াসীন ৩৬.৩৮: সূর্য ভ্রমণ করে উহার নির্দিষ্ট গন্তব্যের দিকে; ইহা পরাক্রমশালী, সর্বজ্ঞের নিয়ন্ত্রণ।
• ইয়াসীন ৩৬.৪০: সূর্যের পক্ষে সম্ভব নয় চন্দ্রের নাগাল পাওয়া এবং রজনীর পক্ষে সম্ভব নয় দিবসকে অতিক্রম করা; নভোমণ্ডলের প্রত্যেকে নিজ নিজ কক্ষপথে সন্তরণ করে।


অর্থাৎ মুহাম্মাদ (সঃ) কুরআনের ভাষায় বলেছেন যে, সূর্য, চাঁদ বা পৃথিবী এমনকি তারাগুলোর কেউই স্থির নয়; প্রত্যেকেই নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট কক্ষপথে গতিশীল, ঘূর্ণায়মান। এমনকি সূর্যও আকাশগঙ্গা ছায়াপথের ভরকেন্দ্রকে ২৫ কোটি বছরে একবার ঘুরে আসে! কিন্তু গালিলেও বা কোপার্নিকাসের আগে সবারই ধারণা ও বিশ্বাস ছিল পৃথিবী মহাবিশ্বের কেন্দ্রে অবস্থিত, স্থির, গতিহীন; আর সূর্য, চাঁদ, অন্যান্য গ্রহগুলো এর চারদিকে ঘূর্ণায়মান। আর তাঁদেরও প্রায় হাজার বছর আগে মুহাম্মাদ (সঃ) নামের অখ্যাত, তৎকালীন সময়ের আধুনিক শিক্ষাহীন, সমাজসংস্কারক, সত্যবাদী বলে পরিচিত এক ব্যবসায়ী কিনা বললেন, পৃথিবীও গতিশীল এবং এ কারণেই হয় দিবারাত্রির আবর্তন! বলাইবাহুল্য, একথা তখন কেউ ভাবতেও পারেনি।


সূর্য ও চাঁদ সম্পর্কে কুরআন আরো বলেছে –
• ফ়ুরকান ২৫.৬১: কত মহান তিনি যিনি নভোমণ্ডলে স্থাপন করিয়াছেন রাশিচক্র (তারকাপুঞ্জ বা তারকামণ্ডল) এবং উহাতে স্থাপন করিয়াছেন প্রদীপ (সিরাজ) ও জ্যোতির্ময় (মুনীর) চন্দ্র।
• নূহ ৭১.১৬: এবং সেথায় (নভোমণ্ডলে) চন্দ্রকে স্থাপন করিয়াছেন আলোকরূপে (নূর) ও সূর্যকে স্থাপন করিয়াছেন প্রদীপরূপে (সিরাজ)।


মহান স্রষ্টা এখানে সূর্যকে বলেছেন ‘প্রদীপ’ (সিরাজ) অর্থাৎ যার নিজস্ব আলো আছে, আর তা উৎপন্ন হয় জ্বালানী পোড়ানোর মাধ্যমে। আধুনিককালে জ্যোতির্বিজ্ঞান বলছে, সূর্যের তাপ ও আলো উৎপন্ন হয় এর গঠনোপাদান হাইড্রোজেন গ্যাসের ফিউশনের মাধ্যমে পুড়ে হিলিয়ামে পরিনত হওয়ার মাধ্যমে। হাইড্রোজেন জ্বালানী শেষ হয়ে গেলে সূর্যও নিষ্প্রভ হয়ে পড়বে – একেবারে প্রদীপের মত। যে পরিমাণ জ্বালানী মজুদ রয়েছে, তাতে সূর্য আরো ৫০০ কোটি বছর জ্বলতে পারবে। অপরদিকে চাঁদকে বলা হয়েছে “জ্যোতির্ময় (মুনীর)”, আলোকিত। অর্থাৎ সে অন্যের আলোয় আলোকিত, তার নিজের আলো নেই। এখানে খেয়াল করলে চোখে পড়ে যে, এদুটো বস্তুর বিশেষণ উল্টোভাবে বলা হয়নি; সূর্যকে ‘মুনীর’ আর চাঁদকে ‘সিরাজ’ বলা হয়নি। আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানের এসব আবিষ্কার ৬ শতকে কারও জানা ছিল না, তাই কেউ হয়ত তখন এটা সেভাবে খেয়ালও করেনি; তবে মুহাম্মাদ (সঃ) কি করে তাহলে একথা বললেন যাকে পুরাতন বলে ফেলে না দিয়ে আজ বরং আরো সঠিকভাবে প্রয়োগ করা যাচ্ছে! অবাক না হয়ে উপায় কি বলুন!




এখন আমি যা বলব তা জেনে তো যে কারোরই চক্ষু ছানাবড়া না হয়ে পারে না! আসুন তাহলে সেটা জেনে নেয়া যাক। মহাবিশ্বের সৃষ্টি ও এর বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে কুরআনে বলা হয়েছে –
• আম্বিয়া ২১.৩০: যাহারা কুফ়রি করে তাহারা (অবিশ্বাসীরা) কি ভাবিয়া দেখে না যে, আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী মিশিয়া ছিল ওতপ্রোতভাবে; অতঃপর আমি উভয়কে পৃথক করিয়া দিলাম এবং প্রাণবান সমস্ত কিছু সৃষ্টি করিলাম পানি হইতে; তবুও কি উহারা বিশ্বাস করিবেনা?
• জ়ারিয়াত ৫১.৪৭: আমি আকাশ (মহাবিশ্ব) নির্মাণ করিয়াছি আমার ক্ষমতাবলে এবং আমি অবশ্যই (ইহার) মহাসম্প্রসারণকারী। (And it is We who are steadily expanding it.)




বিংশ শতাব্দীর প্রারম্ভলগ্নে রুশ বিজ্ঞানী Alexander Friedmann ও বেলজীয় সৃষ্টিতাত্ত্বিক Georges Lamaïtre তাত্ত্বিকভাবে হিসেব করে বের করেন যে, মহাবিশ্ব (Universe) ক্রমশ প্রসারিত হচ্ছে। এ তত্ত্বের পরীক্ষামূলক প্রমাণ মিলল ১৯২৯ সালে এসে, যখন আমেরিকার জ্যোতির্বিজ্ঞানী Edwin Hubble ডপলার ক্রিয়ার মাধ্যমে (redshift) দেখান যে, ছায়াপথগুলো পরস্পর থেকে শুধু যে দূরে সরে যাচ্ছে তা নয়; দূরে সরে যাচ্ছে ত্বরিত গতিতে! জ্যোতির্বিজ্ঞানের ইতিহাসে এটি ছিল মহত্তম আবিষ্কার। এর উপর ভিত্তি করে পরে তত্ত্ব ও তথ্যের মাধ্যমে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য সৃষ্টিতত্ত্ব হিসেবে, মহাবিশ্ব সৃষ্টির তত্ত্ব হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় ‘মহাবিস্ফোরণ তত্ত্ব (Big Bang Theory)’। এ তত্ত্ব সেই দুটো মহাজাগতিক বিষয়কে সুষ্ঠুভাবে ব্যাখ্যা করল যা এর আগে প্রচলিত ‘স্থিতাবস্থার তত্ত্ব’ পারে নি – Cosmic Background Radiation-এর কারণে মহাবিশ্বের গড় তাপমাত্রা ২.৭ কেলভ়িন হওয়ার কারণ কি এবং মহাবিশ্বে পর্যবেক্ষিত হাইড্রোজেন ও হিলিয়ামের অনুপাত ৩:১ হওয়ার কারণ কি।




মহাবিস্ফোরণ তত্ত্ব বলছে, মহাবিশ্বের এ প্রসারণের সূচনা তথা মহাবিশ্ব সৃষ্টির সূচনা আজ ১৪০০ কোটি বছর আগে, এক অতিঘন, অত্যুপ্ত বিন্দুবস্তুর প্রবল বিস্ফোরণের মধ্য দিয়ে। প্রথম থেকেই বিস্ফোরণের ধাক্কায় মহাবিশ্ব প্রসারিত হতে থাকে। প্রথম কয়েকমুহূর্তে এর তাপমাত্রা ছিল কয়েক মিলিয়ন মিলিয়ন কেলভ়িন। কিন্তু মহাবিশ্বের আকার বেড়ে যাওয়ার সাথে সাথে তাপমাত্রাও কমে আসতে থাকে এবং ধীরে ধীরে বিকিরণ থেকে কণিকা হয়ে মৌল তৈরি হতে শুরু হয়। সৃষ্টির ১০ লক্ষ বছর পর মহাবিশ্বের গড় তাপমাত্রা নেমে আসে ৩০০০ কেলভ়িনে। অনচ্ছ (opaque) মহাবিশ্ব ধীরে ধীরে স্বচ্ছ (আলোকভেদ্য) হয়ে ওঠে। প্রসারণের ফলে বিকিরণের তরঙ্গদৈর্ঘ্য বেড়ে যায়। আর তাপমাত্রা নেমে আসে ২.৭ কেলভ়িনে। আর এ ধরনেরই একটি কথা কিনা আজ থেকে প্রায় দেড় হাজার বছর আগে মুহাম্মাদ (সঃ) নামের অখ্যাত সেই লোকটি বললেন! বলাইবাহুল্য, একথাও তখন কেউ ভাবতে পারেনি।




এবং শুধু তা-ই নয়, মুহাম্মাদ (সঃ) একথাগুলোকে তাঁর নিজের কথা নয় ঘোষণা করে সবাইকে তাঁর আরও অনেক কথার সাথে একথাগুলোও বিশ্বাস করতে বললেন। তিনি বললেন একথাগুলো মহাবিশ্বের মহান স্রষ্টার কথা, আর তিনি তার বাণীবাহক ও সকল মানুষের পথপ্রদর্শক একজন স্বাভাবিক মানুষমাত্র।
• কাহফ় ১৮.১১০: (হে মুহাম্মাদ!) বল, ’আমি তো তোমাদের মত একজন মানুষই; (তবে তোমাদের সহিত আমার পার্থক্য ইহাই যে,) আমার প্রতি প্রত্যাদেশ (revelation)হয়।‘




যাহোক, সেই আদিম বিস্ফোরণের ধাক্কায় মহাবিশ্ব আজও প্রসারিত হয়েই চলেছে। তবে মহাকর্ষ এই প্রসারণবেগকে বেশ খানিকটা থিতিয়ে দিয়েছে। কিন্তু ভবিষ্যতে মহাকর্ষ কি এই প্রসারণকে সম্পূর্ণ থামিয়ে দেবে? জ্যোতিঃপদার্থবিদরা বলছেন – এটা নির্ভর করবে মহাবিশ্বের সকল পদার্থ মিলিয়ে এর গড় ঘনত্বের উপর। এক্ষেত্রে তিনটি ঘটনা ঘটা সম্ভব। আপেক্ষিক ঘনত্ব যদি ১ এর কম হয় (যা বর্তমানে রয়েছে), তবে প্রসারণ ত্বরিত হবে; ১ এর সমান হলে ধ্রুবগতিতে প্রসারণ চলতে থাকবে; আর ১ এর বেশি হলে প্রসারণ থেমে গিয়ে সংকুচিত হয়ে আবার সৃষ্টিলগ্নের মত এক বিন্দুতে পতিত হবে এ মহাবিশ্ব (Big Crunch)। এখন, অদৃশ্য বস্তুর (Dark matter) পরিমাণ যথেষ্ট বেশি হলে মহাবিশ্বের আপেক্ষিক ঘনত্ব ১ এর বেশি হবে এবং প্রসারণ থেমে মহাবিশ্ব সংকুচিত হবে, হবে বিধ্বস্ত। কিন্তু আমরা আজও জানতে পারিনি অদৃশ্য বস্তুর হিসেব! জানতে পারিনি এর উপর মহাবিশ্বের প্রসারণের প্রভাব কি হবে!


অন্যদিকে কুরআন বলেছে –
• ইনশিকাক ৮৪.১: যখন আকাশ (মহাবিশ্ব) বিদীর্ণ হইবে...।
• ইনফ়িতার ৮২.২: যখন নক্ষত্রমণ্ডলী বিক্ষিপ্তভাবে ঝরিয়া পড়িবে...।
• তাকভ়ীর ৮০.১-৮০.২: সূর্য যখন নিষ্প্রভ হইবে; যখন নক্ষত্ররাজি খসিয়া পড়িবে...।
• ক়ারি‌‌আ ১০১.১-১০১.৩: মহাপ্রলয়! মহাপ্রলয় কী? মহাপ্রলয় সম্পর্কে তুমি কী জান?


অর্থাৎ কুরআন বলছে, মহাপ্রলয় একদিন ঘটবে। সেদিন মহাবিশ্ব বিদীর্ণ হয়ে যাবে, তারা/নক্ষত্রগুলো নিষ্প্রভ ও ধ্বংস হয়ে যাবে। কুরআন এর নাম দিয়েছে ‘কিয়ামা’। কিয়ামা সম্পর্কে বিজ্ঞান আজও সন্দেহাতীতভাবে, সুনির্দিষ্টভাবে কিছু বলতে পারছে না; তবে এটুকু বলছে – মহাবিশ্বের পরিনতি হয়তো ধ্বংসের পথেই। আজ থেকে বহু বছর পর কোন একদিন বিজ্ঞান হয়তো তা বের করে ফেলবে। কিন্তু কুরআন মানুষের কল্পনারও আগে এ মহাবিশ্ব সম্পর্কে যা যা বলেছে, তা তো সব অক্ষরে অক্ষরে সত্যি প্রমাণিত হয়েছে এবং হচ্ছে। এর পরিনতি সম্পর্কে কুরআনের ভবিষ্যদ্বাণীও নিশ্চয়ই সত্যি হবে।
• বাকারা ২.২: ইহা সেই কিতাব (গ্রন্থ); ইহাতে কোন সন্দেহ নাই। মুত্তাকীদের (প্রভুভীরুদের) জন্য এটি পথনির্দেশ।






টিকা:
পুরাতন বাইবেলে (Old Testament/Tanakh) এ রয়েছে (New International Version) –
• Psalm 93.1: The world is firmly established; it cannot be moved.
• Psalm 96.10: Say among the nations, "The LORD reigns." The world is firmly established, it cannot be moved; he will judge the peoples with equity.
• 1 Chronicles 16.30: Tremble before him, all the earth! The world is firmly established; it cannot be moved.
• Psalm 104.5: He set the earth on its foundations; it can never be moved.
• Ecclesiastes 1.5: The sun rises and the sun sets, and hurries back to where it rises.




সূত্র:
• আল-কুরআনুল করীম, ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, ১৯৯০।
• মহাকাশের কথা, ফারসীম মান্নান মোহাম্মদী, অনুপম প্রকাশনী, ২০০৯।
• ফিরে ফিরে দেখা আমাদের এই মহাবিশ্ব, এ. এম. হারুন অর রশীদ, সাহিত্য প্রকাশ, ২০০১।
• Holy Bible – New International Version, niv.scripturetext.com
• ইন্টারনেট (wikipedia.org, astronomy.com, bible.cc)

8 comments:

2bORnot2b said...

প্রথমে আর্টিকেলের সাইজ দেখে ভয় পেয়েছিলাম, কিন্তু শুরু করার পর দেখলাম এক নিশ্বাসেই শেষ হয়ে গেল। তবে সূর্যগ্রহণ বা চন্দ্রগ্রহণ সম্পর্কে আরও জানার ইচ্ছা ছিল। লেখাটা হঠাৎ করেই অন্য দিকে টার্ন নিল, আর শুরুর টপিকে ফিরে এল না। তবে সব মিলিয়ে ভাল রিভিউ। ওয়েল অর্গানাইজড।

বাংলাদেশ থাকলে অবশ্যই পঞ্চগড় যেতাম, একটা বড় জিনিস মিস হয়ে গেল। I would like to congratulate you for having this Spirit.

সামনে আরও লেখা চাই।

marssohel said...

আমি এখনো পড়িনি। সময় নিয়ে পড়ব ইনশাল্লাহ

adnan said...

জাহিদ,
অনেক ভাল লিখেছিস। great references.. Bible এর quotation গুলো খুব funny লাগল, আগে জানতাম না।

বিজ্ঞানিরা এত মাথা খাটিয়ে শেষ পর্যন্ত সেই আসল জায়গাতেই ফিরে যায়।
"মহাবিস্ফোরণ তত্ত্ব বলছে, মহাবিশ্বের এ প্রসারণের সূচনা তথা মহাবিশ্ব সৃষ্টির সূচনা আজ ১৪০০ কোটি বছর আগে, এক অতিঘন, অত্যুপ্ত বিন্দুবস্তুর প্রবল বিস্ফোরণের মধ্য দিয়ে" - এই বিন্দুবস্তুটা কোথা থেকে আসল? এইটা নিয়ে কেউ চিন্তা করতে চায় না!

সুমন said...

আদনান তুমি কি পাইলা নাকি বিন্দুটা কোত্থেকে আসলো...হাহা। স্যার, অল্প পরিসরে না হলে বড় পরিসরে নির্দিষ্ট & important বিষয়ের উপরে লেখা চাই...

Atiqul Arif said...

Valo hoise lekhata. calaye jan Akon vhi...

Ashikur Rahman said...

:|

Jahid Akon said...

ধন্যবাদ, ফয়সাল, সোহেল, আদনান, সুমন মামা, আতিক আর আশিককে!

আদনান, ""মহাবিস্ফোরণ তত্ত্ব বলছে, মহাবিশ্বের এ প্রসারণের সূচনা তথা মহাবিশ্ব সৃষ্টির সূচনা আজ ১৪০০ কোটি বছর আগে, এক অতিঘন, অত্যুপ্ত বিন্দুবস্তুর প্রবল বিস্ফোরণের মধ্য দিয়ে" - এই বিন্দুবস্তুটা কোথা থেকে আসল? এইটা নিয়ে কেউ চিন্তা করতে চায় না!"

এই বিন্দুটা নিয়ে প্রতিনিয়তই গবেষণফ হচ্ছে। নতুন কিছু তত্থ এসেছে, তুই জানিশ কিনা জানিনা। String theory. এটা Quantum mechanics এর একটা অসাধারণ মজার তত্থ। ৫ টা ভিন্ন ভিন্ন String theory কে একত্রিত করে Ed Whitten দিয়েছেন M theory. এ তত্থ বলে কিভাবে ১১ মাত্রার জগতে membrane এর vibration এর ফলে সংঘর্ষবিন্দুতে Big Bang এর সৃষ্টি হয়! এই তত্থের সত্যতা প্রমাণের জন্যই তো এত খরচ করে CERN এর সেই বিখ্যাত LHC বানানো হল।

Unknown said...

Brother,what a nice topic you have writen!Thanks for such a beautiful topic.But wanna know more complex interesting topics to understand about astronomy.